ঢাকা, শুক্রবার   ১০ জানুয়ারি ২০২৫

হত্যাযজ্ঞের কথা মনে হলে ডুকরে কেঁদে ওঠে রোজিনা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৯:৩৫, ১৪ অক্টোবর ২০১৭

মিলিটারিরা গ্রামে ঢুকে যাকে সামনে পাচ্ছে তাকেই গুলি করে মারছে। এরপর তারা রোজিনাদের বাড়িতে ঢুকে তার বাবা-মা’কে গুলি করে। তখন রোজিনারা তিনবোন পাশের জঙ্গলে লুকিয়ে ছিল। মিলিটারিরা চলে গেলে তারা বাবা-মা’র কাছে যাবে। জীবিত থাকলে সেবা করবে অথবা মারা গেলে সৎকার করবে। কিন্তু মিলিটারিরা ঘর থেকে বের হয়ে বাড়িতে আগুল লাগিয়ে দেয়। নিমিষেই সব ছাই হয়ে যায়।

চোখের সামনে বাবা-মা’র এমন নিমর্ম পরিহাসের বেদনা রোজিনা আক্তারের (৮) কাছে পাহাড়ের চেয়েও বড়।

রোজিনা আক্তার (৮) বলেন, আমরা মিয়ানমারের কাউয়ার বিল গ্রামে বসবাস করতাম। মিলিটারিরা যখন অন্য গ্রামে ঢুকে নির্বিচারে গুলি করে মানুষ হত্যা করছিল তখন সেই খবর শুনে বাবা মা’কে বলত,  আমরা আর এই দেশে বুঝি থাকতে পারবো না। তখন মা বলত কি করবো,দেখি পরিস্থিতি কি হয়। হঠাৎ একদিন দিনের বেলায় এসে আমাদের গ্রামে মিলিটারিরা ঢুকে যাকে পায় তার উপর হামলা চালাতে শুরু করে।  কয়েকজনকে চোখের সামনে গুলি করে মেরে ফেলে। তখন  আমরা পাশের জঙ্গলে লুকিয়ে পড়ি। এরপর আমাদের বাড়িতে ঢুকে বাবা-মা’কে গুলি করে হত্যা করে। পরে বাড়িটি জ্বালিয়ে দেয় মিলিটারিরা। তখন আমরা তিন বোন আর কোনো উপায় না দেখে প্রাণ বাঁচাতে গ্রামের অন্য লোকজনদের সাথে পালিয়ে আসলাম বাংলাদেশে।

মা-বাবা ছাড়া আমারা তিন বোন বুকে কষ্ট নিয়ে না খেয়ে পাহাড়, নদী, অতিক্রম করে এখানে এসেছি।

রোজিনার বাবার নাম মো. সোলেমান, মা- হাসিনা আক্তার। তার অন্য দুই বোন হলো ছমিরা আক্তার (১৪) ও জিসমা বিবি (৭)। বর্তমানে তারা বসবাস করছে টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং চাকমারখোল রোহিঙ্গা ক্যাম্পে।

বর্তমানে রোজিনা আক্তারসহ তার তিন বোনের অবস্থা শোচনীয়। এখানে তাদের কেউ নেই। বাংলাদেশে এসে প্রাণ বাঁচাতে পারলেও স্বজন হারানোর বেদনা বইতে পারছে না তারা। বাংলাদেশে আসার পর বেশ কিছুদিন তারা ত্রাণ না পেলেও বর্তমানে পাচ্ছে। সেই ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞের কথা মনে হলে রোজিনা ডুকরে ডুকরে কেঁদে ওঠে।

জেডএ/ডব্লিউএন


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি