ঢাকা, রবিবার   ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

হাঁটুর ওপরে স্কার্ট পরা যাবে না

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২১:৪০, ৯ জুলাই ২০১৭ | আপডেট: ০৯:১২, ১০ জুলাই ২০১৭

অফিসে হাঁটুর ওপরে পোশাক পরতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আফ্রিকা মহাদেশের খ্রীষ্টান অধ্যুষিত দেশ উগান্ডার সরকার। সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য পোশাক পরিধানে সম্প্রতি এমন কড়াকড়ি আরোপে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে দেশজুড়ে। অনেকে বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে দেখলেও কেউ কেউ সেটাকে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলেই মনে করছেন। বিবিসি`র এক প্রতিবেদনে এমনই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, পোশাক সংক্রান্ত নতুন এ নিয়মে সরকারি চাকরিজীবীদের শালীন পোশাক পরতে হবে। বলা হচ্ছে, নারী সহকর্মীর পোশাক নিয়ে বিভিন্ন সময় অভিযোগ করেন পুরুষ সহকর্মীরা। আর তাই নিয়মকানুন আরোপ করা জরুরি হয়ে পড়েছে।

নতুন নিয়মে পোশাক পরিধানে নারী কর্মীদের যে নিষেধগুলো মেনে চলতে হবে-

১. হাঁটুর ওপর পর্যন্ত ওঠানো স্কার্ট বা জামা পরা যাবে না।

২. হাতাবিহীন জামা, স্বচ্ছ ব্লাউজ বা জামা পরা যাবে না।

৩. নাভি, হাঁটু, শরীরের পেছনের অংশ বা অন্য অংশ দেখানো যাবে না।

৪. চুলে উজ্জ্বল রং করা যাবে না।

৫. হাত-পায়ের নখ তিন সেন্টিমিটারের বেশি বড় রাখা যাবে না। এছাড়া উজ্জ্বল, ডিজাইনের নেইলপলিশ ব্যবহার করা যাবে না।

একইভাবে পুরুষ কর্মীদের পোশাক পরিধানে যে বিষয়গুলো মানতে হবে-

১. পরতে হবে পরিচ্ছন্ন ফুলহাতা শার্ট-প্যান্ট, জ্যাকেট ও টাই।

২. স্বাস্থ্যগত কারণ ছাড়া খোলা জুতা বা স্যান্ডেল পরা যাবে না।

৩. চাপা প্যান্ট পরা যাবে না।

৪. চুল ছোট রাখতে হবে।

নতুন পোশাক কোডের বিষয়ে পাবলিক সার্ভিস মন্ত্রণালয়ের মানবসম্পদ বিভাগের পরিচালক আধা মুয়াঙ্গা বলেন, নতুন এই নিয়মের খুবই প্রয়োজন ছিল, কারণ অনেক পুরুষ তাদের নারী সহকর্মীদের পোশাক নিয়ে সমালোচনা করেন।

তবে, এ নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে নারী আন্দোলনকারীদের মধ্যে। উগান্ডার নারী নেটওয়ার্কের প্রধান রিতা আচিরো বলেন, ‘কীভাবে পোশাক চাকরিতে কাজের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে? এখন উগান্ডার প্রয়োজন বহু শিক্ষক ও সেবিকা। আমাদের মাতৃমৃত্যুর হার বেশি ও শিক্ষকের সংখ্যা অপ্রতুল। আমি বুঝতে পারছি না, মিনি স্কার্ট বা উজ্জ্বল রঙের শার্ট পরা বাদ দিলে কীভাবে এই জরুরি সমস্যাগুলোর সমাধান সম্ভব।’

আচিরো আরও বলেন, ‘টুকরো টুকরো করে আমাদের অধিকারগুলো কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। একসময় আমাদের প্রতিবাদের আর কোনো উপায় থাকবে না।’

কুকুন্দা নামের এক নারী সামাজিক নেটওয়ার্কে এর বিরোধিতা করে লেখেন, ‘আমার হাঁটুতে পুরুষের চোখ আটকে যাচ্ছে বলে আমি আমার কাজে অসুবিধা তৈরি করতে পারি না। যার এ ধরনের মনোভাব আছে, তার এটা বাদ দেওয়া উচিত।’

পুরুষ ও নারীর ইচ্ছা অনুযায়ী পোশাক পরতে দেওয়া উচিত—এমনটা মনে করেন রেডিও উপস্থাপক ও সমালোচক জেমস ওনেন। তবে তিনি বলেন, ‘যে পোশাকই পরা হোক না কেন, তার পরিণতি সম্পর্কে প্রস্তুত থাকা উচিত।’

আরকে/ডব্লিউএন


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি