ঢাকা, সোমবার   ২১ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

হাঁটুর ব্যথা-বেদনা দূর করতে যা করবেন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৫৪, ৯ মে ২০১৮ | আপডেট: ১৮:৫৩, ৯ মে ২০১৮

Ekushey Television Ltd.

বিভিন্ন কারণে হাঁটু ব্যথা হতে পারে। তার মধ্যে বয়সজনিত কারণেও হাঁটু ব্যথা হয়ে থাকে। হাঁটুতে থাকে এক ধরনের তরল। বয়স হলে সেই তরল কমে যায়। সেই থেকেই ব্যথা অনুভব হওয়া শুরু। বয়স হলে মানুষের শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব হয়। ফলে হাড় দুর্বল হয়ে ব্যথা হতে পারে। অনেক সময় আবার রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে গেলেও হাঁটু ব্যথা শুরু হয়ে থাকে। বয়সজনিত কারণ ছাড়া চোট-আঘাত লেগেও ব্যথা হয় হাঁটুতে। চোট লাগলে অনেক সময় লিগামেন্ট ছিঁড়ে যায়। বহু রোগী সেই রোগের সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা করান না। ফলে পরে হাঁটুর সমস্যায় ভুগতে হয় তাদের। এ ছাড়া স্পন্ডেলাইটিস থেকেও হাঁটু ব্যথা হতে পারে।

বয়স্ক নারী বা পুরুষদের মধ্যেই শুধু হাঁটু ব্যথা সীমাবদ্ধ নয়। অল্প বয়সীদেরও এই অসুবিধা হতে পারে। অল্প বয়সীদের দুর্ঘটনা জনিত কারণে হাঁটুতে চোট আঘাত লাগতে পারে। আর হাঁটুতে ব্যথা হলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তা সারতেও সময় নেয়।

হাঁটু ব্যথায় মহিলারাই আক্রান্ত হন বেশি। এর একাধিক কারণ রয়েছে। মহিলাদের ৪৫ বছর বয়সের পর ইস্ট্রোজেন হরমোন ক্ষরণ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে মেয়েদের হাড়ে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ কমে যায়। মেয়েদের মধ্যে যারা বাড়িতে বসে কাজ করেন, তাদের তো বটেই, এমনকী যারা মাঠে কাজ করেন, তাদেরও অনেক সময়ে হাঁটু মুড়ে কাজ করতে হয়। ফলে হাঁটুতে হাড়ের সংযোগস্থলে চাপ অনেকটাই বেড়ে যায়। দিনের পর দিন হাড়ের সংযোগস্থল অর্থাৎ হাঁটুতে চাপ পড়ায় তার ক্ষমতা কমে যায়। তার থেকেই মেয়েদের এখানে ব্যথার সৃষ্টি হয়। পুরুষদের তুলনায় নারীরা বেশি সংখ্যায় হাঁটু ব্যথার সমস্যায় ভোগেন। তাই যতটা সম্ভব হাঁটু না মুড়ে যাতে কাজ করেন, সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে মেয়েদেরই।

মানুষ দিনকে দিন ঘরকুনো হয়ে পড়ছে। ঘরের মধ্যে কাজ করতেই বেশি স্বচ্ছন্দবোধ করছেন মানুষ। নারীদের পাশাপাশি পুরুষেরাও অনেক ক্ষেত্রে বাড়ি থেকে বিশেষ বের হতে চান না। সূর্যের আলো থেকে ভিটামিন-ডি পাওয়া যায়। অধিকাংশ সময়ে বাড়িতে থাকায় সেই ভিটামিন-ডি এর অভাব হচ্ছে। শুধু তাই নয়, আমরা ক্রমশ হাঁটতে ভুলে যাচ্ছি। বাড়ি থেকে ১০০ মিটার দূরে বাজার হলেও আমরা মোটরবাইক, সাইকেল বা টোটোয় করে যাচ্ছি। চলাফেরা কম করার ফলে আমাদের হাড় দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। যার জন্য সামান্য চোট আঘাত লাগলেই হাড় ভেঙে যাচ্ছে বা ব্যথা দীর্ঘদিন ধরে থেকে যাচ্ছে। হাঁটু ব্যথার মতো সমস্যাকে আমরা অনেক সময় গুরুত্বই দিচ্ছি না। ব্যথা যখন হচ্ছে, সেই সময়ই ওষুধ খাচ্ছি। তার পরে সব ভুলে যাচ্ছি। আর তাই ফিরে আসছে ব্যথা।

এখন আমরা শরীরে কোথাও কোনও ব্যথা হলে সহ্য করতে পারি না। আমাদের সহ্য ক্ষমতা কমে গেছে। তাই হাঁটু ব্যথা হলে আমরা পাড়া কিংবা বাড়ির আশে-পাশের ওষুধের দোকানে ছুটে যাই। ব্যথার ওষুধ খেয়ে সাময়িক ভাবে রোগ থেকে মুক্তি পাই। তবে তাতে আমাদের আরও ক্ষতি হচ্ছে। তাই হাঁটুর মতো গুরত্বপূর্ণ স্থানে ব্যথা অনুভব হলে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ খেতে হবে। ব্যথার ওষুধ বেশি খেলে আবার কিডনির সমস্যা হতে পারে। এমনকী, হতে পারে আলসারও। তবে সব থেকে ভাল দাওয়াই হল ব্যায়াম। নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। হাঁটুর ব্যথা হলে পা লম্বা করে একবার শক্ত এবং একবার ঢিল দিতে হবে। এমন করলে হাঁটুর হাড়ের শক্তি বেড়ে যায়।

প্রথমেই বলা হয়েছে, দু’টি কারণে হাঁটু ব্যথা হয়ে থাকে। বয়স জনিত কারণে হাঁটু ব্যথা হলে সহজে দূর করা যায় না। তবে দুর্ঘটনাজনিত কারণে হলে তা কতটা মারাত্মক সেটা দেখে বলা যায় তা পুরোপুরি ঠিক হবে কি-না। তবে ঠিক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এবং সেটা সম্ভব সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে। প্রয়োজনে নতুন করে হাঁটুর হাড় প্রতিস্থাপনও করা যায়। লিগামেন্ট ছিঁড়ে গেলে তা-ও মেরামত করা যায়। লিগামেন্টের সমস্যা হলে হাঁটার সময়ে সতর্ক থাকতে হবে। এ ছাড়া বয়স্কদের ব্যথাও নিয়ম মতো চিকিৎসকদের পরামর্শ নিলে সারানো সম্ভব। তবে একই সঙ্গে অবশ্য মানুষের জীবনযাত্রাতেও বদল আনতে হবে।

সূত্র: আনন্দবাজার

একে// এআর


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি