হাঙ্গেরির বুদা ও পেস্ট ভ্রমন
প্রকাশিত : ০৬:০০, ১৩ মে ২০২০
আমরা জানি হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্ট, কিন্তু অনেকেই হয়তো জানি না বুদা আর পেস্ট দুটো আলাদা শহড়, এই শহড় দুটিকে মিলিয়েই হাঙ্গেরির রাজধানী, ইউরোপের সবচেয় সুন্দর শহড় গুলির একটি হচ্ছে এটি। হাঙ্গেরী রাজধানীকে দানিউবের সুন্দরী বলেও পরিচিতি পেয়েছে। এখানকার লোক সংখ্যা ১৭ লক্ষাধিক। বুদাপেস্টে সন্ধার পর সাতনম্বর পল্লিতে ভিড় লেগে যায়। সেটা হলো খাওয়া দাওয়া আর নাচ-গানের জায়গা। এখানকার ধ্বংসস্তুপের বার-রেস্তোরাগুলি শুরু হয়েছিল নম্বইয়ের দশকে। এখন তার সংখ্যা পঁচিমশশত ছাড়িয়েেছে। এখানকার পাব গুলো দারুন আর সস্তাও বটে। একেক জনের একেক রকম পছন্দ, একেক জন একেক জায়গায় ঘুড়ে বেড়াতে চাই, কোন শহড়ে গেলে একেক জনের একেক রকম চাহিদা, বুদা পেস্ট এমন এক শহড় যেখানে গেলে আপনি যা চান সবই পাবেন। সেখানে অসাধারণ কিছু ঐতিহ্যবাহী ভবন রয়েছে। রেয়েছে রোমাঞ্চকর নাইললাইফ, রয়েছে উষ্ঞস্নানাগার।
ট্যাক্সি! ট্যাক্সি!
বুদাপেস্টে সর্ব প্রথম ট্যাক্সি চালু হয়েছে ১৯১৩ সালে, গোটা গাঙ্গেরীজুড়ে তখন ট্যাক্সি সার্ভিসের সংখ্যা ছিল ২৫ টি। বুদাপেস্টে টেলিফোনে টেক্সি ডাকা যেতো ১৯১৩ সালে, বিশ্বে প্রথম এই পদ্ধতি। ইউরোপের অন্য দেশের তুলনায় বুদাপেস্টে আজও ট্যাক্সি ভাড়া কম। বুদাপেস্টে সব ট্যাক্সিই কিলোমিটার প্রতিভাড়, সবার ভাড়ার রেট সমপরিমান, কিলোমিটার প্রতি প্রায় ৮৫ সেন্ট।
চেইন ব্রিজ
বুদাপেস্টের দানিয়ুব নদীর উপর অপরুপ সুন্দর নয়টি ব্রিজ রয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে পুরাতন ও সুন্দর ব্রিজ চেইন ব্রিজন।
ব্রীজটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৮৪৯ সালে, ব্রীজের এক পাশে বুদা অপর পাশে পেস্ট শহড়, এই ব্রীজ পাড়ি দিয়েই পর্যটকরা পেস্ট শহড়ে যায়। বছরে কোটি পর্যটক হাঙ্গেরীর রাজধানীতে যায়।
দুর্গ শহর
চেইন ব্রীজের সৌন্দর্য উপভোগ করার পর যেতে পারেন দুর্গ শহড়ে। দুর্গ শহড়ে যেতে চাইলে চেইন ব্রীজ থেকে সোজ হেটে চলে যান শহড়টিতে, সেখানে দেখতে পাবেন বিশালাকার সববাড়ি, গির্জা জাদুঘর রয়েছে পুরো এলাকা জুড়েই, আর সেখান কার রাস্ত গুলো কিন্তু ছোট ছোট।
এক সময় শহড়টিতে রাজা ও অভিজাতে লোকেরা বসবাস করতেন। শহড়টি প্রায় গাড়ি মুক্ত হওয়ায় পর্যটকরা এখানে মনের আনন্দে ঘুড়ে বেড়ান।
সেচেনি উষ্ণ স্নান
যারা ইউরোপ ঘুড়েছেন তারা বুঝতে পারনেব, বুদাপেস্টে ঘুড়ে বেড়ানো ইউরোপের চেয়ে কত সহজ। ঘুড়তে ঘুড়তে ক্লান্ত হয়ে গেছে কিংবা কখনো যদি মনের আনন্দে ফ্রেশ হতে চান, করতে পারেন উষ্ঞ পানির সুইমিং পুলে স্নান, সেচেনির উষ্ঞ স্নানের ওসুধি গুন ও অনেক।
১৯১৩ সালে চালু হওয়া এই কমপ্লেক্সটি এ ধরনের স্নানাগারের মধ্যে বৃহত্তম৷ এই কমপ্লেক্সে সর্বমোট ১৫টি পুল আছে ৷ পুলগুলোতে পানির তাপমাত্রা সব সময় ২৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়ে থাকে৷
গ্রেট সিনাগগ
ইউরোপের সবচেয়ে বড় যে সিনাগগটি রয়েছে তা কিন্তু বুদাপেস্টেই অবস্থিত৷ এটির কাজ শুরু হয়েছিল ১৮৫৪ সালে এবং ১৮৫৯ সাল পর্যন্ত চলে এর নির্মাণ কাজ৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত হলেও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরেও স্বমহিমায় এটি টিকে ছিল মুরিশ স্টাইলে নির্মিত এ সিনাগগ৷
এটি আবারো স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ১৯৯৬ সালে। এখানে এক সঙ্গে তিন হাজার মানুষ উপাসনা করতে পারে।
ইহুদি কোয়ার্টার
এখানের ইহুদি অঞ্চল হলো বুদাপেস্টের সবচেয়ে দর্শনীয় স্থান। সেখানে রয়েছে ঝলমলে বার, পাব, ক্লাব ও রেস্টুর্টে যা দর্শনার্থীদের কাছে অন্যরকাম এক আবহ তৈরি করে।
পার্লামেন্ট ভবন
বুদাপেস্ট গেলেন এত কিছু দেখলেন আর সেখান কার পার্লামেন্ট দেখবেন না তা তো হয় না, চলে যান পার্লামেন্ট দেখতে, বুদাপেস্টের পার্লামেন্ট ভবনটি বিশাল আকৃতির এক ভবন। যা ২৬৮ মিটার লম্বা, আর উচ্চতা ৯৬ মিটার, সিড়ি রয়েছে ২৯ টি, কক্ষ আছে প্রায় সাত শত।
দানিয়ুবের পাড়ে যেই কটি দর্শনীয় স্থান আছে তার মধ্যে সবচেয়ে দর্শনীয় স্থান হলো এটি, দানিয়ুবের দুই পাড়ের শহড়ের নান্দনিকতায় ১৯৮৭ সালে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে ইউনেস্কো তালিকা ভুক্ত করেছে।
সূত্র ডযচে বেলে, ও যুগান্তর
এস ইউ এ
আরও পড়ুন