হানাদারদের আতঙ্কের নাম অপারেশন জ্যাকপট (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১১:৫১, ১৭ ডিসেম্বর ২০২২
মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলার দামাল সন্তানেরা অসীম সাহস আর প্রবল মনোবলের সঙ্গেই গুঁড়িয়ে দিয়েছিল পাকিস্তানি শকুনদের আস্ফালন। নিত্য নতুন কৌশলে হানাদার সেনাদের আস্তানায় আঘাত হেনে ভিত নড়বড়ে করে তুলেছিল মুক্তিকামী বাঙালির অপারেশন জ্যাকপট, ক্র্যাকপ্লাটুন আর কিলোফ্লাইট মিশন।
অপারেশন জ্যাকপট। রেডিওতে প্রচারিত দুটি গানের সংকেতে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধে নৌ-সেক্টর পরিচালিত সফলতম গেরিলা হামলা এটি। আত্মঘাতী এ অপারেশন ১৯৭১-এর ১৫ আগস্ট রাত ১২টার পর অর্থাৎ ১৬ আগস্ট প্রথম প্রহরে চট্টগ্রাম ও মোংলা সমুদ্রবন্দর এবং চাঁদপুর ও নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দরে একইসময়ে পরিচালিত হয়।
এই অপারেশনে পাকিস্তান ও তাদের মিত্র কয়েকটি দেশ থেকে আসা অস্ত্র, খাদ্য ও তেলবাহী ২৬টি জাহাজ ডুবিয়ে দেয়া হয়েছিল।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও গবেষক কর্ণেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির বলেন, “পুরো নয় মাসই আমরা নিজেদের সঙ্গে রাখতে পেরেছিলাম, সেখানে বাংলাদেশের শাসনকাজ চলছিল। সেইসব কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা অনুপ্রাণিত হয়েছিল।”
১৯৭১ সালের জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে ক্র্যাক প্লাটুন হয়ে ওঠে পাকিস্তান আর্মির কাছে ঝড়ো আতঙ্কের নাম! তৎকালীন ঢাকাবাসী তাদের সাহসিকতায় মুগ্ধ হয়ে নাম দিয়েছিল ‘বিচ্ছু বাহিনী’। পুরো শহরে প্রায় ৮২টি অপরাশেন চালায় তারা।
এই বাহিনীর অন্যতম সদস্য ছিলেন শহীদ শাফী ইমাম রুমী, শহীদ মাগফার আহমেদ চৌধুরী আজাদ, শহীদ বদিউল আলম বদি, শহীদ আবদুল হালিম চৌধুরী জুয়েল, শহীদ মোহাম্মদ আবু বকর, শহীদ আলতাফ মাহমুদ, আজম খান, নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, লিনু বিল্লাহ এবং আরও অনেকেই।
মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু বলেন, “ঢাকা উত্তর মুক্তিবাহিনী, ঢাকা গেরিলা আজরা- এদেরকে অনেকে ক্র্যাকপ্লাটুন হিসেবে অভিহিত করেন। এদের অপারেশনগুলো দুটি কাজ করেছে, একটি হচ্ছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও সামরিক জান্তা, দখলদার বাহিনী বুঝতে পেরেছিল যে ক্যাপিটালই তাদের হাতের মধ্যে নেই।”
অপারেশন কিলো ফ্লাইট; বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র ভারত থেকে দুটি পুরনো বিমান ও একটি হেলিকপ্টার নিয়ে গঠিত হয় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রথম অপারেশন।
নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের এই কৌশলটা শত্রুর মনোবল ভেঙ্গে দেয়।”
১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে প্রথম এবং সফল এই বিমান হামলাই চূড়ান্ত বিজয়ের পথে আরও একধাপ এগিয়ে দেয় মুক্তিকামী বাংলাদেশকে।
এএইচ