‘হাসিনার আমলে গুম হওয়া ২০০ মানুষের কোনো হদিস নেই’
প্রকাশিত : ১৯:০৫, ৫ নভেম্বর ২০২৪
গত আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে তার টানা ১৬ বছরের কঠোর শাসনের অবসান ঘটে। হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে, যার মধ্যে রয়েছে শত শত রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা এবং আরও অনেককে বেআইনিভাবে অপহরণ ও গুম করার অভিযোগ।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) এএফপি তাদের এক প্রতিবেদেন গুম কমিশনের বরাতে জানিয়েছে, শেখ হাসিনার শাসনামলে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে অপহৃত প্রায় ২০০ জনের খোঁজ এখনো মেলেনি বলে জানিয়েছে এ সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন। গুম তদন্ত কমিশন বলেছে, নিখোঁজ এসব ব্যক্তির কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি এবং তাদের সন্ধান পাওয়া কমিশনের অন্যতম লক্ষ্য।
বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে গঠিত গুম তদন্ত কমিশন জানিয়েছে, হাসিনার পতনের পর পাঁচজনকে গোপন বন্দিশালা থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তবে অনেকেই এখনো নিখোঁজ।
কমিশনের সদস্য নূর খান বার্তা সংস্থা এএফপি’কে বলেছেন, কমপক্ষে ২০০ জনের এখনো খোঁজ মেলেনি। আমরা তাদের সন্ধানে কাজ করছি।
কমিশন জানিয়েছে, ঢাকাসহ আশপাশের এলাকায় আটটি গোপন বন্দিশালার খোঁজ পাওয়া গেছে। এসব বন্দিশালার কয়েকটি কক্ষে মাত্র তিন-চার ফুট জায়গার মধ্যে মানুষকে বন্দি রাখা হতো। কক্ষগুলোর দেওয়ালে আটক ব্যক্তিদের হাতে আঁকা দিন গণনার চিহ্ন দেখা গেছে।
একজন কমিশনার জানান, হাসিনার পতনের পর অজ্ঞাত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এসব গোপন বন্দিশালার প্রমাণ মুছে ফেলার চেষ্টা করেছে।
কমিশনাররা বলেছেন, অধিকাংশ নিখোঁজের ঘটনায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-কে দায়ী করে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
২০২১ সালে জ্যেষ্ঠ সাত কর্মকর্তাসহ র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। হাসিনার শাসনামলের কিছু গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় তাদের জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল।
তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান মঈনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, হাসিনার শাসনামলে সরকারি ও বিচার ব্যবস্থার সাংগঠনিক ভাঙনের কারণে দায়মুক্তির সংস্কৃতি গড়ে উঠেছিল। তারা আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে জনস্বার্থে নয়, বরং নিজেদের এজেন্ডা ও রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করেছে।
শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার গণতান্ত্রিক সংস্কারের অংশ হিসেবে এই তদন্ত কমিশন গঠন করেছে। ড. ইউনূস বলেছেন, তিনি একটি ‘সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া’ সরকারি প্রশাসন ব্যবস্থা পেয়েছেন। এটি নতুন করে সাজানোর প্রয়োজন, যেন ভবিষ্যতে স্বৈরাচারের প্রত্যাবর্তন রোধ করা যায়।
সূত্র: এএফপি
এসএস//
আরও পড়ুন