হাসিনার গ্রাফিতি মোছা নিয়ে যা বললেন সাইয়েদ আব্দুল্লাহ
প্রকাশিত : ১৫:৫৯, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্য সংলগ্ন মেট্রোরেলের পিলারে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যঙ্গ গ্রাফিতি মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। এ নিয়ে মুখ খুলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী সাইয়েদ আব্দুল্লাহ।
সাইয়েদ আব্দুল্লাহ এক ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে মেট্রোরেলের পিলার থেকে এই গ্রাফিতিটা গতকাল গভীর রাতে মুছে ফেলা হচ্ছিল। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে গভীর রাতেই অনলাইনে সরব হই আমরা কয়েকজন। ওইটা মোছা হয়ে যাওয়ায় পর কয়েকজন হাসিনার অন্য একটা ক্যারিকেচার আঁকে। কিন্তু কথাটা হলো, ভিন্নটা কেন করা হবে, আগেরটাই লাগবে। হুবহু আগেরটাই এবং ওইটার ওপরও কালি মেখে, রক্তের মতো লাল রঙ দিয়ে ডা–ই–নি টাইপ ভাইবই রাখতে হবে। আর ওইটাতে যেভাবে জুতার মালা দেওয়া ছিল, ওই একইভাবে রাখতে হবে। মানে হুবহু রিস্টোর করতে হবে।’
তিনি লিখেছেন, ওইটার ভেতর যে মেসেজ ছিল, নতুনটার ভেতর সেটা নাই। গণঅভ্যুত্থানে দেশের জনগণ হাসিনাকে যেভাবে প্রত্যাখ্যান করে উৎখাত করেছিল, সেটার অটো রিপ্রেজেনটেশন ছিল ওইটাতে৷ আর হুটহাট করে যারা এইটা মোছার প্ল্যান করেছিল বা যাদের মাথা দিয়ে এই প্ল্যান বের হয়েছিল, তাদের প্রত্যেককে আইডেন্টিফাই করে কঠোর জবাবদিহির ভেতর নিয়ে আসা উচিত।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের এই সাবেক ছাত্র লিখেছেন, এই নির্দেশ এসেছিল কোন সংস্থা থেকে? এবং ক্যাম্পাসের ভেতর বড় টেকনিক্যাল ভেহিকেল নিয়ে এসে এই কাজ করা হয়েছে, তার মানে হলো এটার পারমিশনের সঙ্গে ভিসি বা প্রক্টরের অ্যাফিলিয়েশন থাকবার কথা। অর্থাৎ কোনো এজেন্সি থেকে যদি বলা হয় এবং প্রক্টর বা ভিসি যারা এইটা প্রতিরোধ করে নাই, তাদের প্রত্যেককে কঠোর জবাবদিহির ভেতর নিয়ে আসতে হবে। স্বৈরাচারী হাসিনাকে প্রত্যাখ্যান করার চিহ্নগুলো মুছে দিয়ে এরা কী করতে চায়, সেটা বোঝার দরকার আছে। এবং একইসঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় ওই জুতারমালা গলায় দেওয়া প্রত্যাখ্যাত হাসিনার ডা-ই-নি রূপ ফুটিয়ে তোলা দরকার। যতবার মুছতে চাইবে, ততবার আরও বেশি করে সব জায়গায় ফুটিয়ে তুলতে হবে।
সবশেষে তিনি লিখেছেন, বিভিন্ন জায়গা থেকে এরা প্রথমে গ্রাফিতি মুছতে চাইবে, তারপর দেশের মানুষের মন থেকেই ওই হয়েনাদের অপকর্মের ফিরিস্তি মুছে দিতে চাইবে। কিন্তু আমরা তা হতে দেব না। দেশের জনগণের উচিত সেটা কোনো অবস্থাতেই না হতে দেওয়া।
এর আগে, সিটি করপোরেশনের কিছু লোক শনিবার মধ্যরাতে রাজু ভাস্কর্য সংলগ্ন মেট্রোরেলের পিলারে শেখ মুজিব ও হাসিনার ব্যঙ্গাত্মক গ্রাফিতি মুছতে ক্রেন নিয়ে আসে। সে সময় হাসিনার গ্রাফিতির মাথা পর্যন্ত মুছে ফেললেও মুজিবের পুরোটাই মুছে ফেলা হয়। পরে শিক্ষার্থীরা এসে বাধা দিলে তারা এটি বন্ধ করতে বাধ্য হয়।
শিক্ষার্থীরা জানান, শেখ হাসিনার গ্রাফিতিটা ছিল মূলত ঘৃণা স্তম্ভ। এটি জুলাই বিপ্লবের স্মৃতি। আমরা এটি দেখে প্রক্টরকে কল করলে প্রক্টর এসে জানান যে, তাকে গোয়েন্দা সংস্থা কল করেছেন শেখ মুজিব এবং শেখ হাসিনার ছবি মুছে দেওয়ার জন্য। পরে প্রক্টর স্যার এস্টেট অফিসকে জানালে অফিস সিটি করপোরেশন ও মেট্রো কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে এটি মুছে ফেলার উদ্যোগ নেয়। যা শিক্ষার্থীদের বাধার মুখে সম্ভব হয়নি।
এমবি