হৃদরোগ নিরাময় ও প্রতিরোধে মেডিটেশন
প্রকাশিত : ১০:০১, ২০ এপ্রিল ২০১৮ | আপডেট: ১৪:৪২, ২২ এপ্রিল ২০১৮
বিশ্বে প্রতিবছর দেড় কোটিরও বেশি মানুষ হৃদরোগে মৃত্যুবরণ করে। খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাপন পদ্ধতিতে পরিবর্তন এনে এর চেয়ে অনেক ভালো ফল পাওয়া গেছে বিশেষজ্ঞদের অভিজ্ঞতায়।
নানা গবেষণার মাধ্যমে এটি এখন প্রমাণিত যে, মেডিটেশন হৃদরোগের প্রতিরোধ ও নিরাময় দুক্ষেত্রেই কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। কোলেস্টেরল হার্ট এ্যাটাকের অন্যতম প্রাথমিক কারণ। মেডিটেশন অস্বাভাবিক বেশি কোলেস্টেরোলের মাত্রাকে কমিয়ে আনতে পারে। মেডিকেল কলেজ অফ জর্জিয়ার ফিজিওলজিস্ট ডা. বার্নেস ১১১ জন তরুণ স্বেচ্ছাসেবীর ওপর এক গবেষণা চালান। তিনি বলেন, লিপিড কমানোর ওষুধ ব্যবহার করে আগে যে ফল পাওয়া যেত তা-ই পাওয়া সম্ভব মেডিটেশনে। ২০০৭ সালে আমেরিকান সাইকোসোমাটিক সোসাইটির বার্ষিক কনফারেন্সে তিনি এ রিপোর্টটি পেশ করেন।
মার্কিন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. ক্রিচটন দীর্ঘ গবেষণার পর দেখিয়েছেন, হৃদরোগের কারণ প্রধানত মানসিক। তিনি বলেছেন, কোলেস্টেরল বা চর্বিজাতীয় পদার্থ জমে করোনারি আর্টারিকে ব্লক করে ফেললেই যে হার্ট এ্যাটাক হবে এমন কোনও কথা নেই। কোরিয়া যুদ্ধের সময় রণক্ষেত্রে নিহত সেনাদের অটোপসি করা হতো। ডাক্তাররা লক্ষ্য করেন, নিহত তরুণ সেনাদের শতকরা ৭০ জনেরই আর্টারি চর্বি জমে প্রায় বন্ধ হয়ে এসেছে (এ্যাডভান্সড স্টেজ অফ এ্যাথেরোস্কে-রোসিস) এবং হার্ট এ্যাটাকের পথে এগুচ্ছে। এদের মধ্যে ১৯ বছর বয়স্ক তরুণ সেনাও ছিল। ডা. ক্রিচটন প্রশ্ন তোলেন, যদি শুধু করোনারি আর্টারিতে চর্বি জমাটাই হৃদরোগের কারণ হতো তাহলে তো এই তরুণ সেনাদের মৃত্যু গুলির আঘাতে নয়, হৃদরোগেই হতো।
নব্য চিকিৎসা ধারার প্রবর্তক ডা. ডীন অরনিশ, ডা. দীপক চোপড়া, ডা. কার্ল সিমনটন, ডা. বার্নি সীজেল, ডা. হার্বার্ট বেনসন প্রমুখ ‘বডি, মাইন্ড, স্পিরিট’ সাময়িকীর ১৯৯৭ সালের বিশেষ সংখ্যায় ‘একবিংশ শতকের স্বাস্থ্য’ প্রচ্ছদ কাহিনীতে দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে মত প্রকাশ করেছেন যে, সুস্থ থাকতে হলে নিজের স্বাস্থ্যের দায়িত্ব নিজেকেই গ্রহণ করতে হবে। নিজেকে নিরাময় করার ক্ষমতা প্রতিটি মানুষের সহজাত ক্ষমতার অন্তর্ভুক্ত। আর এই সহজাত ক্ষমতার সঙ্গে নিজের বিশ্বাসকে সম্পৃক্ত করতে পারলে প্রচলিত চিকিৎসাব্যবস্থার শতকরা ৯০ ভাগ খরচই অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়বে। আপনার স্বাস্থ্য ও নিরাময়ের দায়িত্ব নিতে হবে আপনাকেই। ডাক্তার, ওষুধ, সার্জারি সবই হবে আপনার সহযোগী শক্তি।
একে//এসএইচ/