হেবরনকে বিশ্ব ঐতিহ্য ঘোষণা করায় ইসরাইলের ক্ষোভ
প্রকাশিত : ০৮:৩২, ৮ জুলাই ২০১৭ | আপডেট: ১২:০৩, ৮ জুলাই ২০১৭
ছবি: মুসলিম এবং ইহুদী উভয় ধর্মের মানুষের কাছে পবিত্র স্থান দ্য টম্ব অব দ্য প্যাট্রিয়ার্ক।
ফিলিস্তিনের প্রাচীন নগরী হেবরনের পুরনো নগর কেন্দ্রকে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার পর এর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ইসরায়েল।
ইউনেস্কোর এক বৈঠকে হেবরনের পুরনো নগর কেন্দ্র এবং সেখানে অবস্থিত `টম্ব অব দ্য প্যাট্রিয়ার্ক` বা `আদি পিতাদের সমাধি`কে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট ঘোষণা করে। গোপন ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রতিনিধি এ ঘোষণার পক্ষে মত দেন। সেই সঙ্গে এই জায়গাটিকে বিপন্ন ঐতিহ্যের একটি তালিকায়ও অন্তর্ভুক্ত করে ইউনেস্কো।
বিশ্বের তিনটি প্রধান একেশ্বরবাদী ধর্ম- ইসলাম, খ্রীষ্টান এবং ইহুদী, সবার কাছে পবিত্র এক স্থান `টম্ব অব দ্য প্যাট্যিয়ার্ক। এটি আব্রাহাম (ইব্রাহীম), আইজ্যাক (ঈসা) এবং জ্যাকবের সমাধিস্থল হিসেবে পরিচিত।
ইহুদীদের কাছে এটি দ্বিতীয় পবিত্রতম স্থান। আর ইসলামে একটি চতুর্থ পবিত্রতম স্থান।
অতীতে বহু বার এই জায়গাটি নিয়ে ফিলিস্তিনি এবং ইহুদীদের মধ্যে সংঘাত হয়েছে। কয়েকশো ইহুদী এর কাছে গিয়ে বসতি গেড়েছে। অন্যদিকে প্রায় দু লাখ ফিলিস্তিনি হেবরনের পুরনো এই শহরে থাকেন।
ফিলিস্তিনিরা আশংকা করছে, ইসরায়েল সেখানে যেসব তৎপরতা চালাচ্ছে, তাতে এটির ঐতিহ্য বিপন্ন হতে পারে। ফিলিস্তিনিরা অভিযোগ করছে, ইসরায়েলে সেখানে আন্তর্জাতিক আইন এবং রীতিনীতি লংঘন করে বিভিন্ন ঐতিহ্য ধ্বংস করছে, বাড়ীঘরের ক্ষতি করছে। তারা এই শহরের ইসলামী ঐতিহ্য ধ্বংস করে ফেলতে চাইছে।
টম্ব অব দ্য প্যাট্রিয়ার্ক এখন ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় সেখানকার পরিস্থিতি তারা প্রতি বছর পর্যালোচনা করবে এবং এটি সংরক্ষণে বিভিন্ন উদ্যোগ নেবে।
ইসরায়েল অবশ্য ফিলিস্তিনিদের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, এটি হাজার হাজার বছরের ইহুদী ঐতিহ্যের অংশ।
পোল্যান্ডের ক্র্যাকো শহরে ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির যে বৈঠক চলছে, সেখানে গোপন ভোটাভুটিতে ফিলিস্তিনিদের প্রস্তাবটি পাশ হয়।
ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, আজকে ফিলিস্তিন এবং সারা বিশ্ব হেবরনকে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে উদযাপন করছে। এটি দেশ, কাল, ধর্ম, রাজনীতি, আদর্শের উপরে এক মূল্যবান সম্পদ।
ইউনেস্কোকে তার দেশের বিরুদ্ধে একটি রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে কাজে লাগানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করে ইসরায়েলি শিক্ষামন্ত্রী নাফটালি বেনেট বলেন, "হেবরনের সঙ্গে ইহুদীদের সম্পর্ক হাজার হাজার বছরের। এটি হচ্ছে কিং ডেভিডের জন্ম স্থান, এখানে রয়েছে টম্ব অব দ্য প্যাট্রিয়ার্ক।"
তিনি ইউনেস্কোর এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন।
১৯৯৭ সালের এক চুক্তির অধীনে হেবরনকে ইসরায়েলি এবং ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ভাগ করে দেয়া হয়। শহরটির আশি শতাংশ এলাকা থেকে ইসরায়েলি নিয়ন্ত্রণ প্রত্যাহার করা হয়। শহরের পুরোনো অংশ এবং টম্ব অব দ্য প্যাট্রিয়ার্ক ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে।
সূত্র: বিবিসি।
আরও পড়ুন