ঢাকা, মঙ্গলবার   ২২ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

হোয়াটসঅ্যাপে অর্থ লেনদেনে ক্রিপ্টোকারেন্সি আনছে ফেসবুক

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২২:১৭, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮

Ekushey Television Ltd.

ভার্চুয়াল মুদ্রা ক্রিপ্টোকারেন্সি উন্নয়নে কাজ শুরু করছে মার্কিন টেক জায়ান্ট ফেসবুক। হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের অর্থ লেনদেনের সুযোগ দিতেই এ ক্রিপ্টোকারেন্সি তৈরি করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে এ প্রযুক্তির মাধ্যমে ভারতের রেমিট্যান্স বাজার ধরাই ফেসবুকের প্রধান লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। খবর ব্লুমবার্গ।

ফেসবুকের মালিকানাধীন হোয়াটসঅ্যাপ ভারতে খুবই জনপ্রিয়। দেশটিতে প্রায় ২০ কোটি মানুষ এ অ্যাপ ব্যবহার করে। রেমিট্যান্সের গন্তব্য হিসেবেও বিশ্বে শীর্ষে আছে দেশটি। বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে, গত বছর ভারতে প্রায় ৬ হাজার ৯০০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। এছাড়া ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বিবেচনায় দেশটি বিশ্বে দ্বিতীয় শীর্ষ অবস্থানে আছে। ভারতে বর্তমানে প্রায় ৪৮ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে। গবেষণা প্রতিষ্ঠান ফরেস্টার রিসার্চের তথ্যমতে, ২০২২ সালের মধ্যে এ সংখ্যা বেড়ে ৭৩ কোটিতে পৌঁছে যেতে পারে। এসব কারণে ফেসবুকের জন্য ভারত দারুণ সম্ভাবনাময় বাজার বলে মনে করা হচ্ছে।

আর্থিক সেবা খাতে জায়গা করে নিতে ফেসবুকের ক্রিপ্টোকারেন্সি উন্নয়ন অনেকটা অনুমিত ছিল। ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠানটি হোয়াটসঅ্যাপ পরিচালনার জন্য পেপালের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডেভিড মার্কাসকে নিয়োগ দেয়। একই সঙ্গে তিনি ফেসবুকের ব্লকচেইন সার্ভিসের প্রধান হিসেবে কাজ শুরু করেন। প্রতিষ্ঠানটি পরে এ খাতে আরো কর্মী নিয়োগ দেয়। লিংকডইনের হিসাবমতে, এখন পর্যন্ত এ খাতে প্রায় ৪০ জনকে নিয়োগ দিয়েছে ফেসবুক।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ফেসবুক একটি স্থিতিশীল ভার্চুয়াল মুদ্রা তৈরির চেষ্টা করছে। মানের অস্থিরতা ঠেকাতে মার্কিন ডলারের ওপর ভিত্তি করে এ ডিজিটাল মুদ্রার বিনিময় মূল্য নির্ধারণ করা হবে। তবে তারা স্বীকার করেন, ফেসবুক এ ধরনের মুদ্রা প্রচলন থেকে এখনো অনেক দূরে রয়েছে। কারণ তারা এখনো মাত্র কৌশল নির্ধারণ নিয়ে কাজ করছেন। এসব কৌশলের মধ্যে সম্ভাব্য মুদ্রার মান স্থিতিশীল রাখার জন্য সম্পদ বা প্রচলিত মুদ্রার জামানত রাখার পরিকল্পনা অন্তর্ভুক্ত।

এক বিবৃতিতে ফেসবুকের এক মুখপাত্র বলেন, ফেসবুক বিশ্বের অন্য কোম্পানিগুলোর মতোই ব্লকচেইন প্রযুক্তির বহুমুখী ব্যবহার নিয়ে কাজ করছে। আমাদের ছোট্ট এ দলটি ভিন্ন ধরনের অ্যাপ্লিকেশনের সন্ধান করছে। এর বাইরে এটা নিয়ে আমাদের আর কিছু বলার নেই।

গত বছর থেকেই বিশ্বব্যাপী ডিজিটাল বা ভার্চুয়াল মুদ্রার তৈরির উদ্যোগের কথা শোনা যাচ্ছে। ভার্চুয়াল মুদ্রার ওয়েবসাইট স্টেবল ডট রিপোর্টের তথ্যমতে, অনলাইনে সহজে লেনদেনের জন্য বিটকয়েনের চেয়েও স্থিতিশীল একটি ডিজিটাল মুদ্রা প্রচলনের লক্ষ্যে গত বছর প্রায় ১২০টি কোম্পানি কাজ করেছে। তবে এসব উদ্যোগ এখনো ফলপ্রসূ হয়নি।

ডিজিটাল মুদ্রা ব্যবহারে সবার আগে সামনে আসে নিরাপত্তার বিষয়টি। কারণ ডিজিটাল মুদ্রার বিপরীতে দৃশ্যমান কোনো জামানত না থাকায় বিনিয়োগকারীরা এটি ব্যবহারে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না। ফলে কেউ সহজে এ মুদ্রা কিনতে চান না। সম্প্রতি বেসিস নামের একটি ডিজিটাল মুদ্রা আট মাস চলার পর বন্ধ হয়ে যায়। নিউজার্সিভিত্তিক ডিজিটাল মুদ্রা কোম্পানি হবোকেন জানায়, জামানত দিতে না পারাই এ মুদ্রা বন্ধ হওয়ার প্রধান কারণ।

বর্তমান সময়ের বহুল প্রচলিত আরেকটি ডিজিটাল মুদ্রা ‘টিদার’কেও একই ধরনের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। যদিও নিমার্তারা প্রতিটি টিদার টোকেনের মূল্য ১ মার্কিন ডলার বলে আসছেন। কিন্তু তারা এ ব্যাপারে নিরীক্ষায় রাজি না হওয়ায় মুদ্রাটির গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

তবে ফেসবুকের বিষয়টি একেবারেই ভিন্ন। প্রতিষ্ঠানটির বার্ষিক আয় প্রায় ৪ হাজার কোটি ডলার। এছাড়া এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ২৫০ কোটি। তাই ক্রিপ্টোকারেন্সির বিপরীতে জামানত দেয়া প্রতিষ্ঠানটির জন্য কোনো সমস্যা হবে না বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি