১ এপ্রিল থেকে ডিএনসিসিতে অনলাইনে হোল্ডিং ট্যাক্স
প্রকাশিত : ২২:০৫, ৩০ মার্চ ২০২২
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) সব অঞ্চলে আগামী ১ এপ্রিল থেকে অনলাইনের মাধ্যমে হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় করা হবে। এখন থেকে অটোমেশনের মাধ্যমে ট্যাক্সসহ অন্যান্য সব বিল নেয়া হবে। বিদেশে বসেও যে কেউ ট্যাক্স দিতে পারবেন।
বুধবার (৩০ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর গুলশান-২ এ নগর ভবনের হলরুমে রাজস্ব বিভাগের অটোমেশন কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম এ সব কথা বলেন।
মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, “আগে নগরবাসী ট্যাক্স পরিশোধের ক্ষেত্রে নানাভাবে হয়রানির শিকার হতেন। তাদের হয়রানি ও ভোগান্তি বন্ধ করতেই এরকম ব্যবস্থা করা হয়েছে। ক্যাশলেস লেনদেনের মাধ্যমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে। অটোমেশনের মাধ্যমে নগরবাসী যেমন ঘরে বসে কাঙ্ক্ষিত ডিজিটাল সেবা পাবেন, ঠিক তেমনি এর ফলে লাঘব হবে মধ্যস্বত্বভোগীর দৌরাত্ম্য এবং সাশ্রয় হবে সকলের সময়, কর্মঘণ্টা; কমবে গ্রাহকের ভোগান্তি ও হয়রানি।”
নগরবাসীর উদ্দেশে মেয়র বলেন, ই-মেইল অ্যাড্রেস, “ফোন নম্বর ও জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে খুব সহজেই অ্যাকাউন্ট খুলে ট্যাক্স দেয়া যাবে। আপনারা এই তিনটি তথ্যের মাধ্যমে ঘরে বসেই অনলাইনে ট্যাক্স পরিশোধ করুন।”
তিনি আরও বলেন, “আপনারা অনলাইনে আপনাদের বাড়ির হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করবেন। রাজউক, বিদ্যুৎ বিভাগ এবং ওয়াসা— এই তিনটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সিটি করপোরেশনের চুক্তি হচ্ছে। এর মাধ্যমে সিটি করপোরেশন জানবে বাড়িটি কত স্কয়ার ফিটের। চাইলেও বাসার মাপ কম উল্লেখ করে ট্যাক্স ফাঁকি দেয়া যাবে না।”
এ সময় মেয়র বলেন, “রাজধানীর অনেকগুলো এলাকার বাসিন্দারা কিছু ক্ষেত্রে বেশি সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন, তাই সেসব এলাকায় অন্য এলাকার তুলনায় ট্যাক্স রেট কিছুটা বেশি হবে।”
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এমপি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, “গুলশান-বনানী-বারিধারার মতো এলাকা এবং যাত্রাবাড়ীর পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ অন্যান্য ইউটিলিটিক্যাল সার্ভিসের চার্জ যদি সমান হয়, তাহলে কেউ তো কম সু্যোগ-সুবিধা সম্বলিত এলাকায় থাকবে না। তাই জোনভিত্তিক সার্ভিসের মূল্য নির্ধারণ করা এখন সময়ের দাবি।”
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের রাজস্ব আদায়ের কার্যক্রম অটোমেশন করার উদ্যোগের প্রশংসা করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, অটোমেশিনের মাধ্যমে সত্যিকার অর্থে নাগরিক সেবা সহজীকরণের পাশাপাশি স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা সম্ভব। অটোমেশন ব্যবস্থাপনায়ও কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তবে সেগুলোকে মোকাবেলা করতে হবে। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।
অনুষ্ঠানে রাজস্ব অটোমেশন কার্যক্রম সম্পাদনের লক্ষ্যে ডিএনসিসির সঙ্গে ১০টি ব্যাংক ও একটি মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস কোম্পানির সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। ব্যাংকগুলো হলো: ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড, মধুমতি ব্যাংক লিমিটেড, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেড, সিটি ব্যাংক লিমিটেড, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক লিমিটেড, ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড, ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড, ওয়ান ব্যাংক লিমিটেড এবং মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ট্রাস্ট আজিয়াটা ডিজিটাল লিমিটেড।
ডিএনসিসির সঙ্গে পূর্বেই নগদ ও বিকাশসহ সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, জনতা ব্যাংক লিমিটেড, ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেড, মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেড এবং প্রাইম ব্যাংক লিমিটেডের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর সম্পন্ন হয়।
ডিএনসিসির প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল হামিদ মিয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, নগর গবেষণা কেন্দ্রের সভাপতি অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, ডিএনসিসির কাউন্সিলর, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং ডিএনসিসি এলাকার বিভিন্ন সোসাইটির প্রতিনিধিরা।
আরকে//
আরও পড়ুন