ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪

১০ জেলার জরিপে ৪ হাজার ১৮০টি গণহত্যার নতুন তথ্য

প্রকাশিত : ২৩:২১, ২২ মার্চ ২০১৯ | আপডেট: ২৩:৪৬, ২২ মার্চ ২০১৯

সম্প্রতি করা এক জরিপে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনীর সংঘটিত গণহত্যার নতুন তথ্য উঠে এসেছে। জরিপে দেখা যায়- একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনী ১০ জেলায় ৪১৮০টি গণহত্যা সংঘটিত করেছে।

গণহত্যা-নির্যাতন ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষণা কেন্দ্রের উদ্যোগে শুক্রবার বাংলা একাডেমির শামসুর রাহমান মিলনায়তনে দিনব্যাপী সেমিনারের আয়োজন করা হয়। ‘গণহত্যা-বধ্যভূমি ও গণকবর জরিপ’ শীর্ষক ওই সেমিনারে এ তথ্য তুলে ধরেন অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।

ট্রাস্টের সভাপতি অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন জানিয়েছেন, গাইবান্ধা, জামালপুর, নড়াইল, লালমনিরহাট, পঞ্চগড়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, যশোর, মৌলভীবাজার, কক্সবাজার ও বরিশাল জেলায় ৪ হাজার ১৮০টি গণহত্যা ও নির্যাতনের ঘটনার তথ্য পেয়েছেন তারা।

তিনি বলেন, দশ জেলায় এই জরিপ করতে গিয়ে আমরা দেখেছি, আমরা মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে বড় কম জানি। আমাদের মাথায় আধিপত্য বিস্তার করে আছে বিজয়। খালি বিজয় দেখলে মুক্তিযুদ্ধের যে নিদারুণ যন্ত্রণা, সেটা কিন্তু আমরা পাব না।

এর আগে গতবছর মার্চে অন্য ১০টি জেলার জরিপের ফল প্রকাশ করেছিল গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর ট্রাস্ট। তখন জানানো হয়েছিল, নীলফামারি, বগুড়া, নাটোর, কুড়িগ্রাম, পাবনা, রাজশাহী, সাতক্ষীরা, নারায়ণগঞ্জ, ভোলা ও খুলনা জেলায় মোট এক হাজার ৭৫২টি গণহত্যার ঘটনার তথ্য পাওয়া গেছে জরিপে।

মুনতাসীর মামুন সে সময় বলেছিলেন, বিভিন্ন বইয়ে সারাদেশে গণহত্যার সর্বোচ্চ সংখ্যা পাওয়া যায় ৯০৫টি। কিন্তু জরিপে ১০ জেলার যে তথ্য তারা পেয়েছেন, তাতে ৬৪ জেলায় এই সংখ্যা দাঁড়াবে ধারণার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি। সেক্ষেত্রে শহীদের সংখ্যাও হয়ত ৩০ লাখে সীমাবদ্ধ থাকবে না।

গণহত্যা-নির্যাতন ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষণা কেন্দ্রের উদ্যোগে এবারের জরিপের তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ তো একটি রাজনৈতিক ব্যাপার। সেই রাজনৈতিক সত্যটিকে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছি। আজকে গণহত্যার দিনটি জাতীয় দিবস হিসেবে পালন করছি। এখন সবাই গণহত্যার কথা মনে রাখতে পারছে।

অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, গণহত্যার রাজনীতি আছে। একাত্তরে পাকিস্তান এই রাজনীতি করেছিল আমাদের দমন করার জন্য, চিরদিনের জন্য আমাদের কলোনি করে রাখার জন্য।

আর এখন ‘বিএনপি-জামাত চক্র’ গণহত্যা নিয়ে রাজনীতি করেছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, “পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ও পরে তার স্ত্রী খালেদা জিয়া, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ একাত্তরের গণহত্যার বিষয়টিকে বিস্মৃত করে দিতে চেয়েছেন।

তার মতে, তারা গণহত্যার বিষয়টি মুছে দিতে চেয়েছেন। কারণটা হচ্ছে, গণহত্যার বিষয়টি থাকলে তাদের রাজনীতি থাকে না। কেননা তারা পাকিস্তানি ধারায় পাকিস্তানি এজেন্ডা পরিপূরণ করার জন্য রাজনীতি করছিলেন। গণহত্যার কথা থাকলে আল বদর, আল শামস বা রাজাকার বা অন্য যারা কাজ করছে, যারা এই খুনের সঙ্গে যুক্ত তাদের কথা চলে আসে।

গণহত্যার দায়ে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করলে দেশে ‘জাতীয় ঐক্য‘ ফিরে আসবে বলেও মন্তব্য করেন মুক্তিযুদ্ধ গবেষক এই ইতিহাসবিদ।

এসি

 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি