১০ ডিসেম্বর : ভোলা মুক্ত দিবস
প্রকাশিত : ১২:১৬, ১০ ডিসেম্বর ২০২০
আজ ১০ ডিসেম্বর- ‘ভোলা মুক্ত দিবস’। ১৯৭১ সালের আজকের এই দিনে পাকহানাদার বাহিনী থেকে মুক্ত হয়েছিল তৎকালীন ভোলা মহকুমা।
চারদিক থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল আক্রমনে এই দ্বীপে অবস্থানকারী পাকিস্তানি বাহিনী কোণঠাসা হয়ে জীবন বাঁচাতে ১০ ডিসেম্বর কার্গো লঞ্চযোগে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। ওই দিন তাদের চলে যাওয়ার পর হানাদার মুক্ত হয় ভোলা।
পাক বাহিনী পালিয়ে যাওয়ার পর ১০ ডিসেম্বর সকালে বর্তমান ভোলা কালেক্টরেট ভবনের সামনের জেলা হিসাবরক্ষণ অফিসের ছাদে পতাকা উড়িয়ে ভোলাকে হানাদার মুক্ত ঘোষণা করেন মুক্তিযোদ্ধারা। পাকবাহিনী চলে যাওয়ার খবরে মুক্তিযোদ্ধারা সবাই দল বেঁধে ভোলা সদরে ছুটে আসেন। শহরের ওয়াপদা, পাওয়ার হাউস ও জেলা সরকারি বালক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে শুরু হয় আনন্দ মিছিল।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ভোলা শহরের পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিস চত্বর দখল করে পাকবাহিনী ক্যাম্প বসায়। ওখানেই হত্যাযজ্ঞ চালায় তারা। মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামী নিরীহ মানুষকে ধরে এনে হত্যা করে লাশগুলো সেখানেই মাটিচাপা দেওয়া হয়। এছাড়াও ভোলার খেয়াঘাট এলাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের ধরে এনে হত্যা করে তেঁতুলিয়া নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষের রক্তে রঞ্জিত হয় তেঁতুলিয়া নদীর পানি। বহু নারীকে ক্যাম্পে ধরে এনে রাতভর নির্যাতনের পর সকাল বেলা লাইনে দাঁড় করিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। ওই সময় হানাদার বাহিনী অগণিত মানুষকে হত্যা করে। মুক্তিযোদ্ধাদের দাফন ছাড়াই গণকবর দেওয়া হয়।
যুদ্ধকালে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে হানাদার বাহিনীর সম্মুখ যুদ্ধ হয় ভোলার ঘুইংঘারহাট, দৌলতখান, বাংলাবাজার, বোরহানউদ্দিনের দেউলা ও চরফ্যাশন বাজারে। এসব যুদ্ধে শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাত বরণ করেন। পাশাপাশি বহু পাক বাহিনীও মারা যায়। ১৬ ডিসেম্বর সারা দেশ স্বাধীন হলেও ভোলা স্বাধীন হয় ৬ দিন আগে অর্থাৎ ১০ ডিসেম্বর।
আজ ভোলা মুক্ত দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, ভোলা জেলা প্রশাসক ও বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাসহ সামাজিক অঙ্গ সংগঠন র্যালি, আলোচনা সভা ও বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করেছে।
এসএ/