ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪

১২ বছরে ঋণ পরিশোধের সুযোগ

প্রকাশিত : ১৯:১৯, ২৫ মার্চ ২০১৯

যারা ব্যাংক থেকে ধার করে শোধ করেননি, তাদের ‘ঋণ খেলাপি’ তকমা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আরও একটি সুযোগ করে দিচ্ছে সরকার।

যারা ঋণ শোধ করতে না পারার ‘যৌক্তিক’ কারণ ব্যাখ্যা করতে পারবেন, তাদেরকে মোট ঋণের ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে ৭ শতাংশ সুদে ১২ বছরে ওই টাকা পরিশোধের সুযোগ পাবেন বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

সোমবার শেরেবাংলা নগরে নিজের দপ্তরে এ বিষয়ে এক বৈঠকের পর অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ব্যাংক খাতের ‘সমস্যা দূর করতে’ যে কমিটি করে দিয়েছিলেন, সেই কমিটির সুপারিশেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

শিগগিরই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলে জানিয়ে তিনি বলেছেন, ঋণ নেওয়ার সময় সুদের হার যাই থাকুক না কেন, এই সুযোগ নিয়ে খেলাপি ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে ৭ শতাংশ হারেই সুদ প্রযোজ্য হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, অর্থসচিব আব্দুর রউফ তালুকদার, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া এবং পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা-বিএসইসির চেয়ারম্যান খায়রুল হোসেনও উপস্থিত ছিলেন ওই বৈঠকে।

মন্ত্রী বলেন, আমরা আজকে আমাদের ব্যাংক খাত নিয়ে আলোচনা করতে বসেছিলাম। ব্যাংক খাতের দুরবস্থা দূর করতে আমাদের সাবেক অর্থমন্ত্রী মুহিত ভাই গভর্নরের নেতৃত্বে একটি কমিটি করে দিয়ে গিয়েছিলেন। সেই কমিটির সুপারিশেই আমরা ঋণ খেলাপিদের ঋণ পরিশোধের, অর্থাৎ ঋণ খেলাপি থেকে বেরিয়ে আসার একটি সুযোগ করে দিচ্ছি।

বাংলাদেশ ব্যাংক, ফাইল ছবি বাংলাদেশ ব্যাংক, ফাইল ছবি তবে এ সুযোগ অবশ্যই ‘ভালো ঋণ খেলাপিদের জন্য’ মন্তব্য করে মুস্তফা কামাল বলেন, “আমাদের ব্যাংক খাতে ঋণগ্রহীতা দুই ধরনের। ভালো এবং অসাধু ঋণগ্রহীতা। ভালো ঋণগ্রহীতাদের ঋণ পরিশোধের জন্য আমরা বিশেষ সুবিধা দিচ্ছি। যারা ইচ্ছাকৃতভাবে খেলাপি হননি অথবা বেশ কিছু কিস্তি শোধের পর সুনির্দিষ্ট কারণে আর শোধ করতে না পেরে খেলাপি হয়েছেন, তাদের জন্য এ সুযোগ।

আর যারা তার ভাষায় ‘অসাধু’ ঋণগ্রহীতা, অর্থাৎ যারা ‘ইচ্ছাকৃতভাবে’ খেলাপি হয়েছেন, তাদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের জন্য ‘কঠোর ব্যবস্থা’ নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন অর্থমন্ত্রী।

তিনি বলেছেন, কারা ভালো ঋণ গ্রহীতা তা নির্ধারণের জন্য একটি অডিট কমিটি করে দেওয়া হবে। সেই কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতেই খেলাপি ঋণ পরিশোধের বিশেষ সুযোগ পাবেন ঋণ খেলাপিরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ৩১ ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯৩ হাজার ৯১১ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ১০ দশমিক ৩০ শতাংশ।

এর বাইরে দীর্ঘদিন আদায় করতে না পারা যেসব ঋণ ব্যাংকগুলো অবলোপন করেছে, তার পরিমাণ প্রায় ৩৮ হাজার কোটি টাকা। খেলাপি ঋণের সঙ্গে অবলোপন করা এ মন্দ ঋণ যুক্ত করলে প্রকৃত খেলাপি ঋণ দাঁড়ায় ১ লাখ ৩২ হাজার কোটি টাকা।

২০১৭ সাল শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ছিল ৭৪ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা। এ হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে সাড়ে ১৯ হাজার কোটি টাকা।

আরকে//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি