ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

১৩ দিন ইন্টারনেট বন্ধ, বিদেশি ক্রেতা হারানোর শঙ্কা

শিউলি শবনম

প্রকাশিত : ১০:১২, ১৩ আগস্ট ২০২৪

ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় তথ্য প্রযুক্তি খাতে ১৩ দিনে ক্ষতি প্রায় ১৭শ কোটি টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এতে বিদেশী ক্রেতাদের আস্থা নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি ক্ষুণ্ণ হয়েছে দেশের ভাবমূর্তি। সহিংসতার জের ধরে ইন্টারনেট শাটডাউনের পুরো প্রক্রিয়াটিকেই ব্যবহারকারীদের সাথে শেখ হাসিনা সরকারের মিথ্যাচার বলে অভিযোগ করছেন সংশ্লিষ্টরা।

দেশে ২০ লাখ উদ্যোক্তা ইন্টারনেটের ওপর নির্ভরশীল। শুধুমাত্র সামাজিক যোগাযোগভিত্তিক উদ্যোক্তা  ৫ লাখেরও বেশি। পণ্য সরবরাহে রয়েছেন আরও ৮ লাখ। আর ক্রেতা সংখ্যা অন্তত ২ কোটি। প্রতিবছরই এ সংখ্যা বাড়ছে ২৫ শতাংশ হারে- এমন তথ্য অনলাইন ব্যবসায়ীদের সংগঠন ই–কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ  ই-ক্যাবের।

প্রায় দুই সপ্তাহ ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় ই–কমার্স ও এফ-কমার্স খাতে প্রতিদিন অন্তত ১২০ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। ১৩ দিনে ক্ষতি প্রায় ১৭০০ কোটি। 

 ই-ক্যাব সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট শাহাব উদ্দিন শিপন বলেন, “ই-টিকেটিং, ট্যুরিজ, হেলথ- এরকম আরও কিছু সেক্টর আছে সব মিলিয়ে এগুলোতে দৈনিক প্রায় ১২০-১৩০ কোটি টাকার ট্রানজেকশন হয়। ইন্টারনেট এবং ফেসবুক এ দুটি যদি অ্যাকটিভ থাকে তাহলে সে সেক্টরটা বাধাগ্রস্ত হবেনা।”

বিশ্ববাজারে আইটি রপ্তানি খাতে বড় বাজার রয়েছে বাংলাদেশের। যেখান থেকে গড়ে প্রতিদিন ৭০ থেকে ৮০ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়। কিন্তু ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় সফটওয়্যার সেবা, কলসেন্টার, ফ্রিল্যান্সিংসহ অনলাইনভিত্তিক রপ্তানিমুখী খাতে পড়েছে নেতিবাচক প্রভাব। অনেক বিদেশি ক্রেতার আস্থা হারিয়েছে বাংলাদেশ। তৈরি হয়েছে বিদেশি ক্রেতা হারানোর ঝুঁকি। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তরুণ ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা। যাদের আয়ের একমাত্র অবলম্বন ফেসবুক ও ইউটিউব।

বেসিস সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি ফারহানা এ রহমান বলেন, “অনেক ক্লাইন্ট হয়তো এখন কন্টিনিউ করে যাবেন কিন্তু অদূর ভবিষ্যতে আমরা দেখবো এই দেশে কাজ করার বিষয়ে তারা কিছুটা হলেও দ্বিধাযুক্ত থাকবেন।”

এর বাইরে পোশাক শিল্প, শিক্ষা, টেলিমেডিসিনসহ দেশের প্রায় প্রতিটি খাতই বর্তমানে প্রযুক্তি ও অনলাইন নির্ভর। ফলে বিভিন্ন অর্ডার বাতিল, সেবাবঞ্চিত হওয়াসহ দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির মুখে দেশের অর্থনীতি।

ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেন, “কান্ট্রি ইমেজের কথা যদি বলি সেটা কিন্তু আমার নাই, কান্ট্রি ব্রান্ডিংয়ের কথা যদি বলি সেটাও আমার নাই। দীর্ঘমেয়াধী যে লোকসান হয়েছে এটার হিসাব এখনই বলা যাবেনা।”

জনগণকে ইন্টারনেট সম্পর্কে ভুল তথ্য দিয়ে এ ধরণের ক্ষতি করা হয়েছে বলে দাবি জড়িতদের।

আমিনুল হাকিম বলেন, “৭-৮টি জায়গায় অ্যালোটেড করা, যার কোনোটাই খাজা টাওয়ারে অবস্থিত ছিল না।”

দীর্ঘ সময় ইন্টারনেট বন্ধ থাকলে ভারত, ভিয়েতনামসহ বিভিন্ন দেশে অনলাইন ব্যবসার বাজার চলে যাওয়ার আশঙ্কা ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি