৭ বছর পর বিয়ের অনুমতি পেলেন পাক অভিনেত্রী মীরা
প্রকাশিত : ১৭:৫৬, ২৭ নভেম্বর ২০১৭ | আপডেট: ১৮:১১, ২৭ নভেম্বর ২০১৭
অবশেষে অভিনেত্রী মীরাকে বিয়ের অনুমতি দিয়েছেন পাকিস্তানের একটি (লাহোর) পারিবারিক আদালত। আদালতের বিচারক বাবর নাদিম জানান, মীরার বিয়ের কাবিননামা জাল ছিল না, সঠিক ছিল তা বিচারযোগ্য। বিচারও শেষ হয়েছে। পারিবারিক আদালত আইনে মীরাকে এখন বিয়ে করা থেকে কেউ আটকাতে পারবে না।
এদিকে আদালতের রায়ের পর এক প্রতিক্রিয়ায় মীরা জানান, অবশেষে আমি ন্যায় বিচার পেয়েছি। কিন্তু এর মধ্যে কেটে গেছে আমার জীবনের মূল্যবান সাতটি বছর।
ঘটনাটি ছিল ২০০৯ সালের। অভিনেত্রী ইরতিজা রুবাব মীরাকে নিজের স্ত্রী বলে দাবি করেন দেশটির ফৈসলাবাদের আতিক-উর-রহমান নামের এত ব্যবসায়ী। এ নিয়ে তিনি আদালতে মামলা দায়ের করেন। ব্যবসায়িটির দাবি, ২০০৭ সালে ঘরোয়া পরিবেশে তাদের বিয়ে হয়েছিল।
কিন্তু অভিনেত্রী মীরা কোনো দিন তার স্বামীকে স্বীকার করেননি। মীরা সবার কাছে নিজেকে অবিবাহিত বলে প্রচার করেছেন। এর প্রমাণ দিতে আদালতে বিয়ের কাবিননামা দাখিল করেন আতিক-উর-রহমান। পাশাপাশি লাহোর হাইকোর্টে মীরার কুমারীত্ব পরীক্ষা করার জন্যও আবেদন করেন তিনি। আবেদনে আরও উল্লেখ করেন, মীরার সঙ্গে যেন তার বিবাহ বিচ্ছেদ না হয়। মীরার বিদেশ ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার আবেদনও করেন আতিক।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মীরা বলে আসছেন, আতিক প্রচার পাওয়ার জন্য এসব বলছেন। তিনি মানসিকভাবে অসুস্থ। এক বন্ধুর মাধ্যমে আতিকের সঙ্গে পরিচয়। আতিকের দেখানো বিয়ের কাবিননামাকে তিনি ‘জাল’ বলেছেন।
মীরার আইনজীবী বালাক শের খোসা বলেন, কুমারীত্ব পরীক্ষার যে আবেদন আতিক-উর করেছিলেন, লাহোর হাইকোর্ট সেটি খারিজ করে দেন। এদিকে এই মামলার কার্যক্রম চলতে গিয়ে এরই মধ্যে পেরিয়ে গেছে সাত বছর।
পাকিস্তানের প্রচলিত আইন অনুযায়ী মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মীরা বিয়ে করতে পারবে না। বিষয়টি নিয়ে মীরা সম্প্রতি বলেন, আমি বিয়ে করতে চাই, সন্তানের মা হতে চাই। সময় চলে যাচ্ছে, কিন্তু আদালতের রায়ের অপেক্ষায় আছি। এভাবে প্রতিনিয়ত আদালতে লড়তে লড়তে আমি আজ ক্লান্ত। আমার ক্যারিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি আমি।
দেশটির চলচ্চিত্রজগতের পরিচিত মুখ মীরা। বলিউডেও অভিনয় করেছেন ৪০ বছর বয়সী এই অভিনেত্রী। দেশটির রাজনীতিতেও নামার ইচ্ছা রয়েছে তার। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বেশ সক্রিয় মীরা।
তবে পাকিস্তানে বিয়ের ভুয়া কাবিননামা বের করা এখন মামলি বিষয়। দেশটিতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ছেলেরা এ ধরনের মামলা করে, যাতে অভিযুক্ত মেয়ে আর বিয়ে করতে না পারে। তবে দীর্ঘ সময় গড়িয়ে গেলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে রায় মেয়েদের পক্ষে যায়। কিন্তু রায় ঘোষণা হতে যত দিন গড়িয়ে যায়, তত দিনে মেয়েটির বিয়ের বয়স আর থাকে না।
আবার পাকিস্তানের তারকাদের মধ্যেও বিয়ে গোপন করার প্রবণতা রয়েছে, বিশেষ করে অভিনেত্রীদের মধ্যে এটি বেশি। অভিনেত্রীরা মনে করেন, বিয়ে ক্যারিয়ারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। পাশাপাশি কমে যেতে পারে দর্শক চাহিদা।
/ আর / এআর